promotion

মুদি দোকান ও সুপারশপে বিক্রি বাড়ানোর টিপস

মুদি দোকানে প্রফিট মার্জিন কম থাকায় মুনাফা বৃদ্ধি করতে প্রচুর পরিমাণ আইটেম বিক্রি করতে হয়। এছাড়া দোকানে গ্রাহক ভেড়ানো বিক্রি বাড়ানোর একটি কৌশল। একইসঙ্গে অধিক প্রচারণা বেচাকেনার অন্যতম উপাদান। মুদি দোকান ও চেইন শপে বিক্রি ও লাভ বাড়াতে আরো বেশ কিছু কৌশল রয়েছে।

বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা: 

                                        

শপে বেচাকেনা বাড়ানোর প্রথম ধাপ হলো ভোক্তার কাছে আগে পৌঁছাতে হবে। প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার সংবাদপত্রে পণ্যের বিজ্ঞাপন দিতে হবে। এছাড়া আপনি প্রতি সপ্তাহে পত্রিকার এক পৃষ্ঠার পুরো অংশে প্রচারণা চালাতে পারেন। পুরো পাতা নিতে না পাড়লে; আপনার সংশ্লিষ্ট পণ্য যে পাতার সঙ্গে মেলে সেই বিভাগের পাতায় ছোট আকারে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন। 

যেমন: 

  • রেসিপি বিভাগ
  • রান্নাবান্না 
  • লাইফস্টাইল বিভাগ
  • অর্থনীতি পাতা

টেলিভিশন ও ডিজিটাল মিডিয়া বিজ্ঞাপন : 

টেলিভিশন এ প্রচারের জন্য ভিডিও বিজ্ঞাপন তৈরি করতে পারেন। বিজ্ঞাপনে অভিনেতাদের মডেল হিসেবে নেওয়া যেতে পারে। ডিজিটাল বিজ্ঞাপন টেলিভিশনের পাশাপাশি ডিজিটাল মিডিয়াতে (ফেসবুক, টুইটার, ইন্সটাগ্রাম) প্রচার করা যেতে পারে। 

এছাড়া প্রণ্যের প্রমোশনাল কন্টেন্ট তৈরি করে ডিজিটাল মিডিয়াতে প্রচার করা যায়। একইসঙ্গে বিভিন্ন বিজ্ঞাপন প্রচারণা কোম্পানিতে (গুগল অ্যাডসেন্স, ফেসবুক বুস্ট, অ্যাড এজেন্সি) পাবলিশার অ্যাকাউন্ট খুলে পেইড প্রচারণা চালানো যায়। 

কুপন পদ্ধতি: 

আপনার বিনিয়োগে সর্বাধিক রিটার্ন পেতে টপ সেল আইটেমগুলোতে কুপন দিতে পারেন। কুপনে মূল্য ছাড় আপনার বিক্রি অধিক বাড়িয়ে দেবে। 

স্পন্সর:

স্থানীয় ও জাতীয় বিভিন্ন ক্রীড়া টুর্নামেন্টে স্পন্সর করতে পারেন। এছাড়া আপনার দোকানের পণ্য ইভেন্টে ফ্রি বিতরণ করতে পারেন। এ পদ্ধতিতে আপনার সুপার শপ কিংবা দোকান নিয়ে ভোক্তাদের মধ্যে আগ্রহ তৈরি হবে। 

বাই ওয়ান গেট ওয়ান অফার: 

আপনার শপে বাই ওয়ান গেট ওয়ান অফার কিংবা বাই টু গেট ওয়ান ফ্রি অফার চালু করতে পারেন। এতে আপনার ক্রেতা ও বিক্রি বৃদ্ধি পাবে। 

মূল্য ছাড়: 

সপ্তাহে একটি নির্দিষ্ট পণ্যে বিশেষ মূল্য ছাড় দিতে পারেন। এছাড়া কিছু পণ্যে সব সময়ের জন্য মূল্য ছাড় চালু রাখতে পারেন। এতে একজন ক্রেতা আপনার শপে বারবার আসতে উৎসাহিত হবেন। বিশেষ ছাড় সপ্তাহে ছুটির দিনে দিলে ক্রেতার সাড়া বেশি পাওয়া যাবে। 


লয়্যালটি পয়েন্ট:

লয়্যালটি পয়েন্ট হলো স্থায়ী ক্রেতা, যিনি এখান থেকে পণ্য কেনার মাধ্যমে মুনাফার একটি অংশের ভাগিদার হবেন। যা স্থায়ী ক্রেতার নামে যুক্ত হবে। 

প্রতি ১০০ টাকার বাজারে ১ পয়েন্ট পাবেন ক্রেতা। এই ১ পয়েন্টের মূল্য ধরা যেতে পারে ৮০ পয়সা কিংবা ১টাকা। এতে বিক্রি বৃদ্ধি পাবে। একই সঙ্গে ক্রেতা নিয়মিত এখান থেকে বাজারে আগ্রহ পাবেন। এই পুরো লয়্যালটি প্রক্রিয়াটি অনলাইনে হলে এ কার্যক্রম চালানো সহজ হবে। 

আইটেম ও পরিমাণ বৃদ্ধি: 

একটি ছোট বা মাঝারি মুদি দোকানে ৮০০ থেকে ৯০০ এবং সুপার শপে ১ হাজার থেকে ৩ হাজার পর্যন্ত আইটেম রাখতে হয়। প্রফিট মার্জিন কম থাকায় বেশি আইটেম বিক্রির ফলে মুনাফা নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। এ ব্যবসায় সফল হতে হলে আইটেম বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। 

এছাড়া পর্যাপ্ত পরিমাণ পণ্য স্টকে রাখতে হবে। এ দুটো বিষয়ে ঘাটতি হলে ব্যবসায় শত চেষ্টা করেও সফল হওয়া যাবে না। 


মুদি ব্যবসার ত্রি চক্র হলো; 

  • আইটেম ম্যানেজমেন্ট 
  • স্টক ম্যানেজমেন্ট 
  • অ্যাডভারটাইজিং 

টিপস (এক)

  • আইটেমগুলো ক্রেতার চোখের বরাবর রাখুন। বেশি উচ্চতায় নয়। 
  • সাইনবোর্ডে নতুনত্ব আনুন এবং আকর্ষণীয় করুন। 
  • কোনো ক্রেতা যেন হতাশ হয়ে আপনার দোকান থেকে ফিরে না যান। 
  • শেলফের নিচে দুই-তিন সারিতে বাচ্চাদের কাছে আকর্ষণীয় আইটেমগুলো রাখুন। যেন ওই পণ্যগুলো বাচ্চাদের চোখের স্তরের কাছাকাছি থাকে।  
  • প্রাপ্তবয়স্ক ও যুবকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে কাউন্টার টেবিলের পাশে ক্যান্ডি ও চুইংগামের মতো আইটেমগুলো রাখুন।


টিপস (দুই)

  • বড় কার্ট ব্যবহার করুন।
  • পণ্যের ডিসপ্লে কৌশল করে সাজান। যেমন; আলু-পেয়াজের সঙ্গে ডিম রাখুন। 
  • ডিসপ্লেতে এমন তিনটি পণ্য একসঙ্গে রাখুন যেন তিনটি পণ্য কিনতেই ক্রেতা উৎসাহিত হয়
  • উদাহরণ; পাউরুটির সঙ্গে জ্যাম-জ্যালি রাখুন। পাশে মধুও রাখা যায়। 

অস্থির বাজারে মুনাফা একটু ছেড়ে দিন: 

কোনো একটি পণ্যের মূল্য নিয়ে যখন বাজারে অস্থিরতা থাকে তখন এখান থেকে মুনাফে ছেড়ে দিন। ক্রেতাকে সর্বোচ্চ সাশ্রয়ী মূলে দিয়ে দিন। এতে ক্রেতা বার বার আপনার দোকানে ফিরে আসবে। তখন অন্যান্য পণ্যও কিনবেন।  

এতে আপনার গড় মুনাফা সমন্বয় হয়ে যাবে। যেমন, তেলের বাজার অস্থির, তেলে লাভ ছেড়ে দিয়ে নুডলস, দুধ কিংবা আলু-মসলায় মুনাফা করবেন। 

মূল্য ছাড় অফার করুন: 

কিছু পণ্য থাকে যেগুলো অনেক স্লো আইটেম কিন্তু দ্বিগুণ মুনাফা থাকে। সেগুলোতে মূল্য ছাড় অফার দিন। এছাড়া কিছু কোম্পানি তাদের নতুন পণ্য প্রমোশনে তারাই আপনাকে মূল্য ছাড় দিয়ে সহায়তা করবে। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।  

এছাড়া সবজি ও মাছ মাংস আইটেমে প্রতিদিন বিকেলের দিকে মূল্য ছাড় দেবেন। সেটি হতে পারে ৫% কিংবা ১০%। 

অনলাইন মার্কেট: 

সর্বোপরি আপনার একটি ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে অনলাইন মার্কেট তৈরি করুন। হুবহু আপনার দোকানটি অনলাইনে থাকবে। 

এই ওয়েবসাইটের প্রচারে আপনি ফেসবুক ও টুইটারসহ অন্যান্য সামাজিক মাধ্যম বেছে নিতে পারেন। এতে আপনি আপনার সাইটের পেইড প্রমোশন করুন। 

বর্তমানে বিভিন্ন ব্যাংক ডুয়েল কারেন্সির কার্ড দেয়। সেটা সংগ্রহ করে সামাজিক মাধ্যমে এপনার দোকানের এলাকা সিলেক্ট করে প্রমোশন করুন। এতে শুধু আপনার দোকানের আশপাশের মানুষই আপনার দোকান বেশি দেখতে পাবেন। 

পরবর্তীতে নিজস্ব অথবা থার্ড পার্টির মাধ্যমে ভালো একটি ডেলিভারি সার্ভিস দিয়ে ক্রেতার কাছে আপনার পণ্য পৌছে দিন। এর মাধ্যমে অফলাইনের মতোই অনলাইনে আপনার দোকানের পণ্য বিক্রি হবে। থার্ডপার্টি ডেলিভারি হিসেবে, ফুডপান্ডার (Food panda) পান্ডা গো (Panda Go) সার্ভিসটি নিতে পারেন। 


লেখকের বক্তব্য: 

আলোচিত বিষয়গুলো আপনার দোকানে বিক্রি বাড়াতে সহায়তা করবে। এছাড়া, যে হাসতে জানে না, তার দোকান খোলা উচিৎ নয়। সর্বোপরি একটি উত্তম ও হাসি মুখের সেবা আপনার বিক্রি কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেবে। 

আরো পড়ুন: 

মন্তব্যসমূহ

Advertise

Advertise
Attar - Chocolate Fragrance Perfume | Daraz | Buy Now

promotional

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অনলাইনে ক্যাপচা এন্ট্রি করে আয় করুন, সেরা ১০টি জব সাইট

নার্সারি ব্যবসার আদ্যোপান্ত, ঝুঁকি কম লাভ বেশি

অনলাইনে অডিও শুনে টাকা আয় করুন, যেভাবে হবেন ট্রান্সক্রিপশনবিদ

Promotional